শিক্ষাক্রম বিস্তরণ বিষয়ক প্রশিক্ষণ, প্রস্তুতি, শিক্ষক ডায়েরি-১,শিক্ষক ডায়েরি-২, প্রশিক্ষণ পূর্ব মূল্যায়ন                                                  

আপনি কী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ? আপনি কী শিক্ষাক্রম বিস্তরণ বিষয়ক প্রশিক্ষণ নিয়ে ভাবছেন ? প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে না থাকলে এখনি প্রস্তুতি নেন ! ভেবে থাকলে আপনি সঠিক স্থানেই এসেছেন । তাই দুশ্চিন্তা না করে মনোযোগ সহকারে কনটেন্ট টি পড়ুন । প্রশিক্ষণ পেতে কী কী করতে হবে? এসব জানতে পড়ুন নিচে প্রশিক্ষণ পূর্ব মূল্যায়ন পত্র সহ উত্তরমালা দেয়া আছে !

শিক্ষাক্রম বিস্তরণ প্রশিক্ষণে প্রশিক্ষনার্থী মনোনয়ন নিয়মাবলী।

 প্রশিক্ষণ শুরু 20 সেপ্টেম্বর ২০২৩ থেকে উপজেলা রিসোর্স সেন্টারে।

 প্রতি ব্যাচে প্রশিক্ষণার্থী 30 জন। প্রতি ব্যাচের প্রশিক্ষণ কোর্সের মেয়াদ 3 দিন।

 কারিকুলাম বিস্তরণ বিষয়ক মুক্তপাঠের অনলাইন প্রশিক্ষণের সনদ থাকতে হবে।

 যারা এখনো মুক্তপাঠের থেকে অনলাইনে কোর্সটি সম্পন্ন করেননি তারা দ্রুত কোর্সটি করে ফেলুন ।

কনটেন্টটি ভালো করে পড়ুন । নিচে প্রশিক্ষণ পূর্ব মূল্যায়ন পত্র দেয়া আছে ফলে প্রশিক্ষণটি আপনার কাছে খুব সহজ হবে ।

নিচে প্রশিক্ষণ পূর্ব মূল্যায়ন পত্র দেখুন

জাতীয় শিক্ষাক্রম ২০২১ ( প্রাথমিক স্তর) শিক্ষাক্রমের ধারণা

শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড আর পদ্ধতিগত শিক্ষার ভিত্তি হলো শিক্ষাক্রম। শিক্ষাবিদগণ বিভিন্ন সময়ে শিক্ষাক্রমের ভিন্ন ভিন্ন সংজ্ঞা ও ব্যাখ্যা প্রদান করেন।

→ টাইলার (Ralph Tyler- 1949) শিক্ষার সংজ্ঞা সরাসরিভাবে প্রদান না করে চারটি প্রশ্নের মাধ্যমে একটি

ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন, যেমন:

• শিক্ষা উদ্দেশ্য অর্জন করবে,

• কী কী শিখন অভিজ্ঞতার মাধ্যমে বিদ্যালয় ঐসব উদ্দেশ্য অর্জন করবে,

• কীভাবে শিখন অভিজ্ঞতাগুলো সংগঠন ও বিন্যাস করা যাবে,

• উদ্দেশ্যগুলো অর্জিত হয়েছে কিনা তা কীভাবে যাচাই করা যাবে।

→ হুইলার (Wheeler, 1967), শিক্ষাক্রম বলতে শিক্ষার উদ্দেশ্য, শিখন অভিজ্ঞতা নির্বাচন, বিষয়বস্তু নির্বাচন বিষয়বস্তু শনাক্তকরণ, বিষয়বস্তু সংগঠন, মূল্যায়ন ইত্যাদির একটি বৃত্তাকার গতিশীল প্রক্রিয়াকে বুঝিয়েছেন। → কার (Professor Kerr, 1968 ) বিদ্যালয় কর্তৃক পরিকল্পিত ও পরিচালিত যাবতীয় শিখন যা বিদ্যালয় এবং বিদ্যালয়ের বাইরে দলগত বা ব্যক্তিগতভাবে সম্পন্ন করা হয়, তাই শিক্ষাক্রম।

সেলর ও আলেক্সান্ডার (১৯৮০)। শ্রেণিকক্ষে খেলার মাঠে বা বিদ্যালয়ের বাইরে শিক্ষার্থীদের শিখনকে

প্রভাবস্থিত করার জন্য বিদ্যালয়ে প্রচেষ্টার সমষ্টিই শিক্ষাক্রম।

> উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়-যুক্তরাজ্য (১৯৮২) শিক্ষায়তনে শিক্ষা গ্রহণকালে বিভিন্ন রকম সুবিন্যস্ত ব্যবস্থার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদেরকে সামাজিকভাবে জ্ঞান, দক্ষতা এবং মূল্যবোধ ও দৃষ্টিভঙ্গি বিকাশের সুযোগ দেওয়া হয় তাই শিক্ষাক্রম।

শিক্ষাক্রম পরিমার্জন

ডেলর কমিশন রিপোর্ট অনুযায়ী জীবনব্যাপী শিক্ষা চারটি ঘামের উপর প্রতিষ্ঠিত গুলো হচ্ছে জানার জন (Learning to know), কাজের জন্য শিক্ষন (Learning to do), মিলেমিশে বসবাস করার জন্য (Learning to live together) এবং বিকশিত হয়ে উঠার জন্য শিখন ( Learning to be) । এই চারটি কমেন উপর ভিত্তি করে শিক্ষাক্রম উন্নয়ন ও পরিমার্জন করা হয়ে থাকে। শিক্ষাক্রম উন্নয়ন ও পরিমার্জন জাতীয় শিক্ষা এ পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের একটি নিয়মিত গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম সার্বজনীন প্রাথমিক শিক্ষার সফল বাস্তবায়নের জন্য সরকার কর্তৃক গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের মধ্যে প্রাথমিক স্তরের শিক্ষাক্রম পরিমার্জন ও নবায়ন একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এই উদ্দেশ্যে প্রাথমিক শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়নের জন্য জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড ১৯৮৬ সালে একটি দীর্ঘ মেয়াদী ও বিস্তৃত কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করে। এই সময়ে উদ্দেশ্যভিত্তিক শিক্ষাক্রমের পরিবর্তে প্রাথমিক জ্বরের জন্য যোগ্যতাভিত্তিক শিক্ষাক্রম প্রণয়ন সংক্রান্ত কার্যক্রম শুরু করা হয়। এই শিক্ষাক্রম ১৯৮৮ সালে চূড়ান্ত  করা হয়। দেশব্যাপী ১০০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠানুক ট্রাই-আউট পরিচালনার নিমিত্ত শ্রেণিকক্ষে ব্যবহারের মাধ্যমে উপযোগিতা যাচাই করা হয়। ১৯৯২ থেকে ১৯৯৬ সালে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে দেশের সকল বিদ্যালয়ে প্রবর্তন করা হয়। পরবর্তীতে ২০০২ সালে এবং সর্বশেষ ২০১১ সালে শিক্ষাক্রম পরিমার্জন করা হয়। সময়ের পরিক্রমায় বৈশ্বিক পরিবর্তনের প্রেক্ষিতে বর্তমান শিক্ষাক্রম পরিমার্জন ও উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়।

শিক্ষাক্রমের কার্যকারিতা যাচাই, পরিস্থিতি বিশ্লেষণ এবং চাহিদা নিরূপণ

বর্তমান শিক্ষাক্রনের কার্যকারিতা যাচাই, পরিস্থিতি বিশ্লেষণ এবং চাহিদা নিরূপণের জন্য ২০১৭ থেকে ২০১৯ সাল শব্যাপী সমীক্ষা পরিচালনা করা হয়। শ্রেণিকক্ষে পাঠ পর্যবেক্ষণ ও অর্জন অভীক্ষা পরিচালনার মাধ্যমে বিদ্যমান অভীষ্ট শিক্ষাক্রমের (Intended Curriculum) সাথে বাস্তবায়িত শিক্ষাক্রমের (Implemented curriculum) কার্যকারিতা নিরুপন করা হয়। শিক্ষাক্রমের চাহিদা যাচাই এর বিভিন্ন পর্যায়ে সরকারের লক্ষ্য, পরিকল্পনা, নীতি, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গীকার, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গবেষণা, বিভিন্ন দেশের শিক্ষাক্রম, তথ্য ও দলিল ইত্যাদি পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণ করা হয় এবং থিমভিত্তিক কারিগরি কর্মশালা পরিচালনা করা হয়। শিক্ষার্থী, অভিভাবক, এসএমসির সাথে ফোকাস গ্রুপ ডিসকাশান, শিক্ষক, প্রধান শিক্ষক, বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষা কর্মকর্তাবৃন্দের সাক্ষাৎকার, শিক্ষাবিদ ও নীতি নির্ধারকদের সাথে গোল টেবিল বৈঠক এবং পর প্রেরণের মাধ্যমে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মতামত গ্রহণ করা হয়।

প্রাক-প্রাথমিক পর্যায় ও প্রাথমিক স্তরের পরিস্থিতি বিশ্লেষণ এবং শিখন চাহিদা নিরূপণ ও প্রচলিত শিক্ষাক্রমের কার্যকারিতা বিশ্লেষণ শীর্ষক সমীক্ষার উল্লেখযোগ্য সুপারিশসমূহ নিম্নরূপ।

• শিক্ষাক্রমে মনোপেশিল্প ও আবেগিক ক্ষেত্রে অধিক গুরুত্ব প্রদান করে বিষয়ভিত্তিক যোগ্যতাসমূহে জ্ঞান, দক্ষত ও দৃষ্টিভঙ্গির সুষম প্রতিফলন নিশ্চিত করা দরকার।

• বৈশ্বিক জ্ঞানকে স্থানীয়করণের মাধ্যমে শিক্ষাক্রমে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

• সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার আওতায় শিক্ষক ও তদারককারী কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট সকলের মাঝে শিক্ষাক্রম বিচরণ নিশ্চিত করতে হবে।

* যোগ্যতাভিত্তিক শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হলে শিক্ষার্থী-কেন্দ্রিক পাঠদান ও যৌক্তিকভাবে মূল্যায়নের ক্ষেত্রে শিক্ষকের দক্ষতা বৃদ্ধি প্রয়োজন ।

• শিক্ষা অনুযায়ী রিনা, অভিজ্ঞতাভিত্তিক ও অন্তভুক্তিমূলক শিখন শেখানো কার্যক্রম নিশ্চিত করার জন্য শিক্ষক সহায়িকায় যথাযথভাবে নির্দেশনা সংযোজন এবং শিক্ষকদের কাছে এর প্রাপ্যতা নিশ্চিত করতে হবে।

• বিষয়ভিত্তিক প্রশিক্ষণে হাতে কলমে কাজ (Hands on Activities) প্রকল্প, পরীক্ষণ, পর্যবেক্ষণসহ বিভিন্ন শিখন দক্ষতা অনুশীলনের সুযোগ রাখতে হবে যাতে শিক্ষকবৃন্দ শ্রেণিকক্ষে এর প্রয়োগ করতে পারে। • প্রাথমিক স্তরে শিক্ষার্থীর ভাষা ও যোগাযোগ দক্ষতা অর্জনের উপর অধিকতর গুরুত্ব দিতে হবে।

• শিখন-শেখানো কার্যক্রমকে অধিকতর আকর্ষণীয় ও কার্যকর করার জন্য তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সুবিধাদি গ্রহণ করতে হবে।

• ধর্মীয় উগ্রবাদ (extremism) রোধে ধর্মীয় অনুশীলনের পাশাপাশি বিশ্বভ্রাতৃত্ব, অন্য ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাবোধসহ সার্বজনীন মূল্যবোধসমূহ ধর্ম শিক্ষার গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করতে হবে।

• শিক্ষার্থীর সুকুমারবৃত্তি ও সৃজনশীলতার বিকাশের জন্য শিক্ষাক্রমে শিল্পকলা চর্চার উপর গুরুত্ব দিতে হবে।

• শিক্ষার্থীর দৈহিক ও মানসিক উভয়ক্ষেত্রে সুষম বিকাশের জন্য শারিরীক শিক্ষার ব্যবহারিক অনুশীলনের উপর গুরুত্ব আরোপের পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্যশিক্ষাকেও যথাযথ গুরুত্ব দিতে হবে।

• বিষয়ভিত্তিক শিক্ষাক্রমে আন্তবিষয়ক সমতা নিশ্চিত করা জরুরি।

• বিষয়ভিত্তিক সময় কটন সুসম হওয়া প্রয়োজন।

• শিক্ষাক্রমে পরিবর্তিত পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে প্রাসঙ্গিক বিষয় (যেমন, ডিজিটাল টেকনোলজি) ও যোগ্যতাসমূহের প্রতিফলন থাকতে হবে।

• প্রাক প্রাথমিক পর্যায়, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাক্রমের মধ্যে সামান্য বিধান করা প্রয়োজ

• শিক্ষাক্রম প্রণয়ন ও বারো জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।

• শিক্ষাক্রমের লক্ষ্য, উদ্দেশ্য, অর্জনযোগ্য যোগ্যতা ও শিখনফল এমনভাবে বিন্যস্ত করা প্রয়োজন যাতে

বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার ২০১৮ ও রূপকল্প ২০৪১ এর লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা হয়।

এসকল সমীক্ষার সুপারিশের উপর ভিত্তি করে, প্রেক্ষাপট, প্রয়োজন এবং নতুন বিশ্বপরিস্থিতিতে টিকে থাকার মতো যোগ্য করে নতুন প্রজন্ম গড়ে তুলতে প্রাক প্রাথমিক থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা এবং বিস্তৃত প্রাথমিক শিক্ষাক্রম প্রণয়ন করা হয়।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা ২০২১ অবলোকন করে নীতিগত সম্মতি প্রদান করেন। তিনি শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা প্রদান করেন-

১. নিজেদের প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নিয়ে শিক্ষার চিন্তা করতে হবে।

২. নির্দিষ্ট দিনের পাঠ যেন শ্রেণিকক্ষেই শেষ হয় সে ধরণের লিখন কার্যক্রম পরিচালনায় সচেষ্ট হয়ে বাড়ির কাজ বা হোম ওয়ার্ক কমাতে হবে।

৩. খেলাধুলা ও সৃজনশীল কাজের উপর গুরুত্ব দিতে হবে।

৪. চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সাথে মানিয়ে নিতে পারে এরকম শিক্ষা ব্যবস্থা প্রণয়ন করতে হবে।

৫. মাতৃভাষার সাথে দ্বিতীয় ভাষার উপর গুরুত্ব নিয়ে ছোটবেলা থেকেই প্রস্তুত করা যেতে পারে। ৬. ভিন্নভাবে সমর্থ শিশু এবং তৃতীয় লিঙ্গের প্রতি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরির বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে।

জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখাটি পরবর্তীতে উপদেষ্টা কমিটি কর্তৃক অনুমোদিত হয় এবং প্রাথমিক স্তরের বিস্তৃত শিক্ষাক্রমটি জাতীয় শিক্ষাক্রম সমন্বয় কমিটির সভায় অনুমোদিত হয়।

প্রস্তুতি

জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষাক্রম ২০১১ এবং জাতীয় শিক্ষাক্রম ২০২১ এর তুলনামূলক বৈশিষ্ট্যসমূহ

জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষাক্রম ২০১১

  • যোগ্যতাভিত্তিক (প্রথম -পঞ্চম শ্রেণি) ২৯টি মূল যোগ্যতার উপর ভিত্তি করে শিক্ষাক্রম বিস্তৃত করা হয়েছে।
  • জ্ঞানমূলক (Cognitive), আবেদিক (Affective) ও মনোপেশীজ (Psychomotor) ক্ষেত্রে বিকাশ।
  • শিখন শেখানো কার্যক্রম শিক্ষার্থীকেন্দ্রিক, সক্রিয় শিখন এবং অভিজ্ঞতা ভিত্তিক
  • বিষয়ভিত্তিক যোগ্যতাসমূহকে সহজ থেকে কঠিন, জানা থেকে অজানা এবং নিকট থেকে দূর রুমে সাজানো হয়েছে।
  • শ্রেণিভিত্তিক আবশ্যকীয় শিক্ষনক্রমে (Essential | Learning Continues) প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ধারাবাহিকতা বজায় রাখা হয়েছে।
  • শিক্ষাক্রম অন্তর্ভুক্তিমূলক।
  • শিক্ষাক্রমে মূল্যায়ন পদ্ধতি ও কৌশল ছিল না।
  • মুল্যবোধ ও নৈতিকতার যোগ্যতাগুলো চারটি ধর্মে ভিন্ন ভিন্নভাবে প্রতিফলিত ছিল।
  • সঙ্গীত এবং চারু ও কারুকলা নামে দুটি পৃথক বিষয় ছিল : শারীরিক শিক্ষা নামে বিষয় ছিল ।

জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষাক্রম ২০২১

  • যোগ্যতাভিত্তিক (প্রাক-প্রাথমিক থেকে দ্বাদশ শ্রেণি) ১০টি মুল যোগ্যতা থেকে শিক্ষাক্রম বিস্তৃত করা হয়েছে। টেকসই উন্নয়ন  অভিলক্ষ্য, চতুর্থ শিল্প বিপ্লব ও রূপকল্প ২০৪১ বিবেচনায় যোগ্যতাসমূহ পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে।
  • বিষয়ভিত্তিক যোগ্যতাসমূহকে সহজ থেকে কঠিন, জানা থেকে অজানা এবং নিকট থেকে দূর ক্রমে সাজানো হয়েছে।
  • শ্রেণিভিত্তিক আবশ্যকীয় লিখনক্রমে (Essential | Learning Continua প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ধারাবাহিকতা বজায় রাখা হয়েছে।
  • শিক্ষাক্রমে যোগ্যতা, শিখনফল এবং পরিকল্পিত কাজসমূহ | অন্তর্ভুক্তিমূলক করে পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে।
  • শিক্ষাক্রমে মূল্যায়ন পদ্ধতি ও কৌশল এবং ধারাবাহিক মূল্যায়নের নির্দেশনা সংযোজন করা হয়েছে।
  • ২০২১ সালের শিক্ষাক্রমে জ্ঞানমূলক (Cognitive), আবেগিক (Affective) ও মনোপেশীজ (Psychomotor) ক্ষেত্রে    পুনবি©নাশ করা হয়েছে ।

শিখন শেখানো কার্যক্রমকে অধিকতর বাস্তবায়নযোগ্য করা হয়েছে ।

  • মূল্যবোধ ও নৈতিকতার যোগ্যতাগুলোকে অভিজ্ঞ রেখে বিভিন্ন ধর্ম অনুযায়ী শিখনফল বিন্যস্ত করা হয়েছে।
  • সঙ্গীত এবং চারু ও কারুকলা বিষয়কে শিল্পকলা নামে ছিল; শারীরিক শিক্ষা নামে একটি বিষয় ছিল। এবং শারীরিক শিক্ষা বিষয়কে শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য শিক্ষা নামে পুনর্বিন্যস্ত করা হয়েছে ।

জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা ২০২১: প্রাক-প্রাথমিক থেকে দ্বাদশ শ্রেণি

শিক্ষাক্রমের মূলনীতি

শিক্ষাক্রম রূপরেখার রূপকল্প, অভিলক্ষ্যসমূহের যথাযথ বাস্তবায়ন ও অনুসরণের মাধ্যমে সঠিকভাবে অর্জন নিশ্চিত করতে দেশের প্রেক্ষাপট বিবেচনায় কিছু মূলনীতি সুনির্দিষ্ট করা হয়েছে যা এই শিক্ষাক্রম উন্নয়ন ও বাস্তবায়নের দিক নির্দেশনা হিসেবে কাজ করবে, সেগুলো হ

মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সমৃদ্ধ

একীভূত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক

বৈষম্যহীন

বহুমাত্রিক

• যোগ্যতাভিত্তিক

• অভিজ্ঞতাভিত্তিক শিখন

• প্রাসঙ্গিক ও নমনীয়

• জীবন ও জীবিকা সংশ্লিষ্ট

• অংশগ্রহণমূলক

• শিক্ষার্থীকেন্দ্রিক ও আনন্দময়

রূপকল্প

‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত দেশপ্রেমিক, উৎপাদনমুখী, অভিযোজনে সক্ষম সুখী ও বৈশ্বিক নাগরিক গড়ে তোলা।’

মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ, জাতীয় ইতিহাস, ঐতি, সংস্কৃতি নং নৈতিক মুল্যবোধসম্পন্ন, বিজ্ঞানমনস্ক, আত্মবিশ্বাসী, দক্ষ, সৃজনশীল ও সুখী একটি প্রজন্য তৈরির লক্ষ্যে রূপকল্পটি নির্ধারিত হয়েছে। যে প্রজন্য স্বকীয়তা বজায় রেখে অপরের কল্যাণে নিবেদিত হওয়ার পাশাপাশি সমাজের ধর্ম-বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষে সকলের সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণ ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে সচেষ্ট হবে। সৃজনশীলতা ও রূপান্তরযোগ্য দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে উৎপাদনশীল নাগরিক হিসেবে স্বাধীনতার সুফল নিশ্চিত করে উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণে অবদান রাখতে পারবে। এছাড়াও বিশ্বায়নের প্রেক্ষাপটে আত্মপরিচয়ের বহুমাত্রিকতাকে স্বাগত জানিয়ে অভি বিশ্বনাগরিক হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে পারবে।

শিক্ষার মাধ্যমে এ রূপকল্প অর্জনে বাংলাদেশের সকল শিক্ষার্থীর জন্য মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। প্রয়োজন শিক্ষাক্রম এবং তার বাস্তবায়নে সামগ্রিক শিক্ষা ব্যবস্থাপনায় কিছু কৌশলগত বৈশিষ্ট্যের প্রতিফলন নিশ্চিত করা। একটি কার্যকর পরিকল্পনা ও তার সুষ্ঠু বাস্তবায়নই এ রূপকল্প অর্জন নিশ্চিত করতে পারে। রূপকল্প বাস্তবায়নের অভিলক্ষ্য সমূহ নিম্নরূপ।

 সকল শিক্ষার্থীর অন্তর্নিহিত সম্ভাবনা বিকাশে কার্যকর ও নমনীয় শিক্ষাক্রম

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থীর বিকাশ ও উৎকর্ষের সামাজিক কেন্দ্র

প্রাতিষ্ঠানিক পরিবেশের বাইরেও বহুমাত্রিক শিখনের সুযোগ ও স্বীকৃতি

  সংবেদনশীল, জবাবদিহিমূলক একীভূত ও অংশগ্রহণমূলক শিক্ষাব্যবস্থা

শিক্ষাব্যবস্থার সকল পর্যায়ে দায়িত্বশীল, স্ব-প্রণোদিত, দক্ষ ও পেশাদার জনশক্তি

শিক্ষাক্রমে যোগ্যতার ধারণা

মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে পরিবর্তনশীল প্রেক্ষাপটে অভিযোজনের জন্য জ্ঞান, দক্ষতা, মূল্যবোধ ও দৃষ্টিভঙ্গিরা সময়ে অর্জিত সক্ষমতা ।

নিচের ছকে প্রাথমিকস্তরের বিষয়সমূহের বিন্যাস দেয়া হয়েছে।

শিখন-ক্ষেত্র

ভাষা ও যোগাযোগ

জীবন ও জীবিকা

সমাজ বিশ্ব নাগরিকত্ব

পরিবেশ ও জলবায়ু

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

ডিজিটাল প্রযুক্তি

শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য এবং সুরক্ষা

মুল্যবোধ ও নৈতিকতা

শিল্প ও সংস্কৃতি

বিষয়ভিত্তিক বৈশিষ্ট্য

বাংলা: শিক্ষাক্রম ২০২১ এ বাংলা বিষয়কে প্রধানত ভাষা ও যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে, সেই সঙ্গে অন্যান্য বিষয় শিখনের মাধ্যম হিসেবেও বিবেচনা করা হয়েছে। এই প্রক্রিয়ায় শিক্ষার্থী পরিবেশ, পরিস্থিতি ও পরিপ্রেক্ষিত অনুযায়ী যোগাযোগে পারদর্শী হয়ে উঠবে। ভাষা এক দিকে গ্রহণমূলক, অন্য দিকে প্রকাশমূলক। শিখন প্রক্রিয়ায় সকল শিশুর সমান অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার জন্য ভাষা ও যোগাযোগ দক্ষতা অর্জনে ভাব গ্রহণ ও প্রকাশে শোনা, বলা, পড়া ও লেখার পাশাপাশি বিকল্প গ্রহণ ও প্রকাশকে গুরুত্বের সঙ্গে গ্রহণ করা হয়েছে। দেখা, শোনা, অনুভব, পড়া প্রভৃতির মাধ্যমে ভাষাভাষীর মধ্যে গড়ে ওঠে গ্রহণমূলক পারদর্শিতা। সেই সঙ্গে বলা, লেখা, ইশারা, স্পর্শ, সত্রিনা প্রবণ প্রভৃতির মাধ্যমে গড়ে ওঠে ভাষার প্রকাশমূলক পারদর্শিতা।

ইংরেজি: শিক্ষাক্রমে বিশ্বায়নের হাতিয়ার হিসেবে ইংরেজি ভাষা শিক্ষাকেও যোগাযোগ ও শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। বাগুন ক্ষেত্রে প্রয়োগ এবং যে পরিস্থিতে প্রয়োগ করা হবে সে সম্পর্কে ধারণা ও ভাষার সৃজনশীল প্রয়োগের উপর জোর দেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রেও শোনা, বলা, পড়া ও লেখার পাশাপাশি বিকল্প গ্রহণ ও প্রকাশকে তরুত্বের সঙ্গে গ্রহণ করা হয়েছে। ভাষার যথাযথ প্রয়োগের জন্য মৌলিক ব্যাকরণগত দক্ষতাকেও গুরু প্রাণ করা হয়েছে।

গণিত: গণিত এমন একটি চিন্তন প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে বিমূর্ত ধারণাকে যৌক্তিকভাবে সম্পর্কযুক্ত করা হয়। তাই গণিতের মূল ভিত্তি যুক্তি ও সৃজনশীলতা। জটিল বৈজ্ঞানিক সমস্যা থেকে শুরু করে প্রাতাহিক হিসাব নিকাশ পর্যন্ত গণিতের বিস্তৃতি দৃশ্যমান। গণিতের মূল ক্ষেত্র হচ্ছে সংখ্যা, পরিমাণ ও আকার আকৃতি। গাণিতিক ধারণা, প্রতিনাগত ধারণা সমস্যা সমাধান দক্ষতা ব্যবহার করে যৌক্তিক ও কল্যাণকর সিদ্ধান্ত নিতে পারা এবং উদ্ভাবনী সক্ষমতা প্রদর্শন ও প্রয়োগ করতে পারাই গণিত বিষয়ের মূল প্রতিপাদ্য।

বিজ্ঞান:  বিজ্ঞান শিক্ষা শুধু বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব জানার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে না, বরং এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীর অনুসন্ধিৎসা, প্রক্রিয়াকরণ দক্ষতা ও বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গির বিকাশ ঘটে। ফলাফলস্বরূপ, শিক্ষার্থীর মধ্যে বিজ্ঞানমনক্ষতা তৈরি হবে এবং প্রাত্যহিক জীবনে, কিংবা যেকোনো সমস্যা বা এমণে তার প্রভাব পড়বে। অনুসন্ধানের মাধ্যমে বৈজ্ঞানিক জ্ঞান, প্রক্রিয়াগত ধারণা, মূল্যবোধ ও দৃষ্টিভঙ্গি প্রয়োগ করে প্রাতাহিক সমস্যা সমাধান করাই বিজ্ঞান বিষয়ের মূল প্রতিপাদ্য। অনুসন্ধানমূলক শিখনের ফলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্রমান্বয়ে বৈজ্ঞানিক সাক্ষরতা গড়ে তোলা এই শিক্ষাক্রমের প্রধান উদ্দেশ্য। পাশাপাশি অন্যতম উদ্দেশ্য হল শিক্ষার্থীদের Socio-scientific মূল্যবোধ গড়ে তোলা।

সামাজিক বিজ্ঞান : শিক্ষার্থী বিষয়জ্ঞান, সামাজিক দক্ষতা ও সামাজিক দৃষ্টিভংগি ও মূল্যবোধ প্রয়োগের মাধ্যমে দেশীয় ও বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে প্রয়োজনীয় সামাজিক যোগ্যতা অর্জন করবে। হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করে শিক্ষার্থীকে সমাজ ও দেশের কল্যাণে নিয়োজিত করাই এ বিষয়ের মূল প্রতিপাদ্য। যৌক্তিক অনুসন্ধান পদ্ধতির প্রাথমিক ধারণা কাজে লাগিয়ে প্রাকৃতিক ও সামাজিক কাঠামোর আত্মসম্পর্ক বিষয়ে অনুসন্ধানের যোগ্যতা অর্জন করবে। গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, অধিকার, দায়িত্ব সম্পর্কে জেনে সচেতন নাগরিক হিসেবে ভূমিকা পালন করতে পারবে। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও সংবিধানের মূলনীতির আলোকে সামাজিক ন্যায়বিচার নীতি ধারণ করে সম্পদের টেকসই ব্যবহার ও পরিবেশ সংরক্ষণে ভূমিকা রাখতে পারবে। সামাজিক বিজ্ঞান বিষয়টি এস কাটিং ইস্যু হিসেবে দশটি মূল শিখনক্ষেত্রের সবগুলোরই নির্ধারিত যোগ্যতা অর্জনে ভূমিকা রাখলেও, এতে মূলত সমাজ ও বিশ্ব নাগরিকত্ব, পরিবেশ ও জলবায়ু এবং জীবন ও জীবিকা শিখন-ক্ষেত্রগুলো অধিক গুরুত্ব পেয়েছে।

ধর্ম নৈতিক শিক্ষা : নিজ ধর্ম সম্পর্কে জানা এবং ধর্মীয় জ্ঞান, বিশ্বাস, মূল্যবোধ, বিধিবিধান ও অনুশাসন উপলব্ধি করে তা নিজ জীবনে অনুশীলন করা এবং অন্যের ধর্ম ও বিশ্বাসের প্রতি সহনশীলতা প্রদর্শন করে শান্তিপূর্ণ সহবস্থান নিশ্চিত করা ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা বিষয়ের মূল উপজীব্য। ধর্মীয় ধর্মীয় বিধিবিধান এবং ধর্মীয় মূল্যবোধ চর্চার মাধ্যমে ধর্মীয় শিক্ষার যোগ্যতাসমূহ অর্জিত হবে। ধর্মীয় অনুশাসন ও বিধিবিধানের সৌন্দর্য উপলব্ধি ও চর্চায় অনুপ্রাণিত করার মাধ্যমে স্থিতিশীল, সৌহার্দ্যপূর্ণ সুখী সমাজ তথা বিশ্ব গড়ে তোলার বিষয়টিকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। মূল্যবোধ ও নৈতিকতার যোগ্যতাসমূহকে অভিন্ন রেখে ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা, হিন্দু ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা, বৌদ্ধ ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা এবং খ্রীষ্ট ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা- এই চারটি বিষয়ের বিষয়ভিত্তিক শিক্ষাক্রম সাজানো হয়েছে।

শারীরিক মানসিক স্বাস্থ্য শিক্ষা : আবেগিক বুদ্ধিমত্তা, আত্মবিশ্লেষণ এবং সামাজিক বুদ্ধিমত্তা অর্জন করে নিজেকে ভালোবেসে নিজের দায়িত্ব উপলব্ধি করে নিরবিচ্ছিন্নভাবে শরীর ও মনের যথাযথ যত্ন ও পরিচর্যার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা ভালো থাকার এবং অন্যকে ভালো রাখার যোগ্যতা অর্জন করবে। শিক্ষার্থী নিজে ভালো থাকা, অন্যকে ভালো রাখা, শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার জন্য পরিচর্যা, স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন, আবেগ ব্যবস্থাপনা, শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ সুরক্ষা ও শৃংখলাবোধ এ বিষয়ের মূল উপজীব্য।

শিল্পকলা : শিক্ষার্থীদের মানসিকভাবে উদার, সংবেদনশীল, নান্দনিকবোধ সম্পন্ন করার লক্ষ্যে প্রকৃতি পাঠ, তার সঙ্গে দেশীয় লোকজ ও সমসাময়িক বিশ্বের সৃজনশীল চর্চার মাধ্যমে শিল্পকলা বিষয়টি পরিকল্পনা করা হয়েছে। প্রকৃতি ও সংস্কৃতির বৈচিত্রকে অবলোকন ও অনুভব করে (দেখে, শুনে, স্পর্শ ও অনুধাবন করে) শিল্পের উপাদান হিসেবে আকার, আকৃতি, রং, সু, ইত্যাদি অনুসন্ধান ও উপলব্ধি করা এবং তার প্রতিলিপি ও প্রতিরূপ তৈরি করা ।

জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষাক্রম ২০২১ এর আলোকে শ্রেণিকক্ষে ধারাবাহিক সামষ্টিক মূল্যায়ন পরিচালনার নির্দেশিকা

১.০ শিখন মূল্যায়ন

১.১ ভূমিকা

শিক্ষার্থীর শিখন মূল্যায়নের প্রধান উদ্দেশ্য হলো শিক্ষার্থীর প্রত্যাশিত শিখন নিশ্চিত করা। বাস্তবতার নিরিখে মূল্যায়নের ফলাফল যে উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়, তাকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করা যায়। যথা- (ক) শিক্ষার্থীকে মানসম্মত শিখনে সহায়তা করা। (খ) শিক্ষার্থীর প্রোফাইল বর্ণনা করা এবং (গ) শিক্ষকের শিখন-শেখানো প্রকার মানোন্নয়ন করা। শিক্ষার্থীর গ্রেড, তার অবস্থান, অগ্রগতি, শিখন চাহিদা, শিক্ষাক্রম ইত্যাদি সবকিছুর ওপর মূল্যায়নের প্রভাব রয়েছে।

জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষাক্রম রূপরেখা ২০২১ অনুযায়ী প্রাথমিক স্তরের মূল্যায়নে পদ্ধতিকে নতুনভাবে সাজানো হয়েছে । প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে বর্তমানে ১ম থেকে ৩য় শ্রেণির সকল বিষয়ে শিখন মূল্যায়নের জন্য বিদ্যালয় ও শ্রেণিকক্ষভিত্তিক মূল্যায়ন (School and Classroom Based Assessment) বা ধারাবাহিক মূল্যমান পদ্ধতি প্রবর্তনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।

১.২ ধারাবাহিক মূল্যায়ন কী ও কেন

ধারাবাহিক মূল্যায়ন শিখন শেখানো কার্যাবলির অবিচ্ছেদ্য অংশ। বিভিন্ন পদ্ধতি ও কৌশলের মাধ্যমে শিখন- শেখানো কার্যক্রমের শুরুতে, কার্যক্রম চলাকালীন এবং শেষে শিক্ষার্থীকে মূল্যায়নের প্রক্রিয়াই হলো ধারাবাহিক মূল্যায়ন। এ পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীর জ্ঞান, দক্ষতা এবং দৃষ্টিভঙ্গিকে ও মূল্যবোধকে মূল্যায়ন করা হয়। শিক্ষার্থীর শিখন মূল্যায়ন করে দুর্বলতা চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ফলাবর্তন ও পুনঃমূল্যায়ন করে শিক্ষার্থীর শিখন অগ্রগতি নিশ্চিত করা হয় বলে এ ধরনের মূল্যায়নকে শিখনের জন্য মূল্যায়নও বলা হয়ে থাকে। ধারাবাহিক মূল্যায়ন কোনো আনুষ্ঠানিক মূল্যায়ন নয়। তাই এই মূল্যায়নের জন্য আলাদা কোনো আনুষ্ঠানিক পরীক্ষা নেওয়া যাবে না। ধারাবাহিক মূল্যায়নের মূল লক্ষ্য হচ্ছে শিক্ষার্থীকে তার শিখনে সহায়তা করা। শিখন-শেখানো কার্যাবলি চলাকালে প্রয়োজনীয় ফলাবর্তনের মাধ্যমে এই শিখন নিশ্চিত করতে হবে। শিক্ষক শ্রেণিকক্ষে স্বাভাবিক ও আনন্দময় পরিবেশে ধারাবাহিক মূল্যায়ন করবেন।

১.ধারাবাহিক মূল্যায়নের উদ্দেশ্যসমূহ:

• ধারাবাহিক মূল্যায়নের প্রধান উদ্দেশ্য হলো শিক্ষার্থীকে তার শিখনে সহায়তা করা।

• শিক্ষার্থীর শিখন অগ্রগতি নিয়মিতভাবে পরিবীক্ষণ করে শিক্ষার্থীর শিখন ঘাটতি বা উন্নয়নের ক্ষেত্র নিরূপণ করা এবং তার প্রতিকার করা।

• শিক্ষার্থীর চিহ্নিত শিখন ঘাটতি বা উন্নয়নের ক্ষেত্রগুলো কার্যকর ফলাবর্তন (Feedback) এবং পুনঃমূল্যায়নের মাধ্যমে পূরণ করা।

শিক্ষক ডায়েরি-১,শিক্ষক ডায়েরি-২

প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থীর শতভাগ ধারাবাহিক মূল্যায়ন, মূল্যায়নকৃত তথ্য শিক্ষক ডায়েরি-ডায়েরি-সন্নিবেশপূর্বক শিখন অগ্রগতি প্রতিবেদন তৈরির সাধারণ নির্দেশনা:

১. প্রথম শ্রেণিতে ২০২৩ শিক্ষাবর্ষ থেকে সামরিক মুকোনো আনুষ্ঠানিক লিখিত পরীক্ষা নেয়া যাবেনা। ধারাবাহিক মুল্যায়নের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের বিষয়ভিত্তিক বিনা শিক্ষক শিখন-শেখানো ক শুরুতে কার্যক্রম চলাকালীন বা পাঠ শেষে শিক্ষার্থীদের ধারাবাহিক মূল্যায়ন করবেন।

২. প্রথম শ্রেণির শিক্ষা (Teacher’s Guide) শেষে ধারাবাহিক মূল্যায়ন নির্দেশিকা সংযুক্ত রয়েছে ।উক্ত  নির্দেশিকায় ধারাবাহিক মূল্যায়ন কৌশল ও রেকর্ড সংরক্ষণের জন্য শিক্ষক ডায়েরি-১ ,শিক্ষক ডায়েরি-২ এর ব্যবহার এবং শিখন অগ্রগতি প্রতিবেদন প্রতের পদ্ধতি বিস্তারিত বর্ণনা রয়েছে। শিক্ষক সংশ্লিষ্ট মূল্যায়ন নিদে©শিকা অনুসরণ করে শিক্ষক ডায়েরি-১ ,শিক্ষক ডায়েরি-২ সটিক ভাবে ব্যবহার করতে পারবেন । এছাড়া (এনসিটিবি) এর ওয়েবসাইট প্রথম শ্রেণির সকল বিষয়ের শিক্ষক ডায়েরি-১ ,শিক্ষক ডায়েরি-২ আপলোড করা আছে। ওয়েব সাইট থেকে সফট কপি ডাউন লোড করে ভাতে প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থীর  নাম  ও রোল লেখে প্রিন্ট করে নেবেন।

৩. প্রধান শিক্ষক তার বিদ্যালয়ের ১ম শ্রেণির  শিক্ষার্থীর সংখ্যা অনুসারে  প্রতিটি বিষয়ের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক পৃষ্ঠা প্রিন্ট/ফটোকপি করে নেবেন। এক্ষেত্রে ভর্তি শিক্ষার্থীর সংখ্যার চেয়ে নীচে ৫/১০টি খালি সারি করে নেবেন। বছরের বিভিন্ন সময়ে আরো নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি হতে পারে।

৪. প্রথম শ্রেণির প্রতিটি বিষয়ের জন্য যেমন- ইংরেজি ,সামাজিক বিজ্ঞান,প্রা: বিজ্ঞান,  নৈতিক শিক্ষা, হিন্দু ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা, খ্রিস্টধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা, ধৌ ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা, শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য শিক্ষা এবং শিল্পকলা শিক্ষক ডায়েরি শিক্ষক ডায়েরি-এ প্রস্তুত করতে হবে।

৫. শ্রেণি কার্যক্রমে শিক্ষার্থীদের ধারাবাহিক মুল্যায়ন ও ফলাবত©ন প্রদানের জন্য ডায়েরি- ১ এবং শিক্ষার্থীদের পাঠ/অধ্যায়/উপযোগী যোগ্যতা অজ©নের বিবরণীর জন্য  ডায়েরি- ২ ব্যবহার করতে হবে ।

৬. শ্রেণি কক্ষে উপস্থিত সকল শিক্ষার্থীর মুল্যায়ন একটি পাঠ করতে না পারলে পরে তা করতে পারবেন। তবে লক্ষ্য রাখতে হবে প্রতিপারে কোনো শিক্ষার্থীকে মুল্যায়ন করতে না পারলেও একটি যোগ্যতার অধীন কোনো একটি পাঠান কালে অন্তত একবার হলেও মূল্যায়ন করতে হবে। এ উপযোগী যোগ্যতার সদস্য অধ্যায়ের পাঠদান কালে শ্রেণির প্রতিটি শিক্ষার্থী যেন একবার হলেও মুল্যায়নের আসে প্রানিশ্চিত করতে হবে। দুর্বল শিক্ষার্থীরা যাতে মুল্যায়ন থেকে বাদ না যায় সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে।

৭. শিক্ষক সহায়িকাকে প্রতিটি পাঠ/পিরিষা সেশন শেষে ছকের সাহায্যে মুল্যবোধ সম্পর্কিত নির্দেশসমূহ Assessment Indicators চিহ্ন পাঠ/ নির্দেশক। তবে ১ম শ্রেণির বাংলা বিষয়ের যে পাতে শিক্ষা নেই (যেমন- সেই পারে কোনো মূল্যায়ন নির্দেশ নেই কারণ মুলায়ন নির্দেশকের মান গুলো মুলত শিখনফলের আলোকে লেখা রয়েছে।

৮. শিক্ষার্থীদের শিখনফল অজ©নের  নির্ধারিত মান হলো পারেনি (০), আংশিক পেরেছে (১), পেরেছে (২)। তবে কেউ “০” পেলে তাকে ফলাবর্তনের মাধ্যমে কমপক্ষে ‘আংশিক পেয়েছে পর্যায়ে উন্নিত করতে হবে। প্রান্তিক শেষে শিক্ষার্থীর বিষয়ভিত্তিক  অর্জন উপযোগী যোগ্যতা অর্জেনের মান : ০-৩৯ % সহায়তা দরকার, ৪০-৫৯% সন্তোষজনক ৬০-৭৯ % হলে ভালো ও ৮০-১০০ % পেলে উত্তম ।

৯. শিক্ষক ধারাবাহিক মূল্যায়নের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় ফলাবর্তন প্রদান করবেন। উপস্থাপিত পাঠটি শেষ হলে বা শিক্ষকের সুবিধামত সময়ে (Knowledge at K. Skill S দৃষ্টিভঙ্গি ও দুলাযোগ/ AttitudeandValues at SA) শিক্ষক ডায়েরি লিপিবদ্ধ করতে হবে ।

১০. বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুসহ পিছিয়ে পড়া  শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন এবং শিখন দুর্বলতা নিরাময়ের জন্য শিক্ষক বিশেষ যত্নবান হবেন।

১১. ফলাবর্তন ও শিখনফল অজ©নের মান ডায়েরী-১ এ প্রদানের ক্ষেত্রে প্রথমে পেন্সিল দিয়ে লেখা সমীচীন । কেননা যে শিক্ষার্থী ১ এবং ০পাবে তাদের ফলাবর্তন প্রদানপূর্বক পরবর্তী শিক্ষার মান অর্থাৎ ১ কে ২ এবং ০ কে ১ বা ২ উন্নিত করতে হবে। এক্ষেত্রে পেন্সিল দিয়ে দেখা হলে সেটি মুছে  শিক্ষক সহায়িকাকে পূর্ব পারলাচনা ক্লাসের সুযোগ রাখার কারণে ফলাবর্তন প্রদানেরও সুযোগ রয়েছে ।

১২. উল্লেখ্য, পাঠের শেষের দিকের পিরিয়ডের মূল্যায়ন নির্দেশক পূরণ করতে গিয়ে অনেক সময় দেখা যক্ষার্থী ইতিমধ্যে পুরথম দিকের পিরিয়মের মুলানের মাধ্যমে শিখনফল অর্জন করে ফেলেছে। এক্ষেত্রে শিক্ষক ডায়েরী-১ এ  পূর্বে পেন্সিল দিয়ে লেখা উক্ত শিক্ষার্থীদের ভারতমাটি সংশোধন করতে হবে । ধারাবাহিক  মূল্যায়নে শিক্ষক শিক্ষার্থীর সর্বশেষ ফলাফল সংরক্ষণ করবেন এবং তা নির্দিষ্ট পাঠ শেষে শিক্ষক   ডায়েরী-২ এ  লিপিবদ্ধ করবনে ।

১৩. ধারাবাহিক মূল্যায়ন কার্যক্রম সুধু কার্যকরভাবে পরিচালনার সুবিধার্থে শিক্ষক একাডেমিক সুপারভাইজারে আবশ্যকীয় শিক্ষনরুম, শ্রেণিভিত্তিক উপযোগী যোগার, শিক্ষক সহায়িকার বি সংক্রান্ত নির্দেশনা, মুল্যায়ন নির্দেশকের (জ্ঞান, দক্ষ ধারণা এবং লায়ন রেকর্ড টুল শিক্ষক আয়োজিত, শিক্ষক মানি আপত্তি রিপোর্ট কার্ড) সম্পর্কে সম্যক ধারণা থাকতে হবে। প্রয়োজনে বিষয়গুলো নিয়ে সহকর্মী সহকারী উপজেলা/থানা শিক্ষা অফিসারের সঙ্গে আলোচনা করতে পারে।

১৪. প্রতি প্রান্তিক শেষে প্রধান শিক্ষা শিবেন (রিপোর্ট কার্ড) তৈরি করবেনা জাগতি প্রতিবেদনের নমুনা শিক্ষক সহায়িকার মুল্যায়ন নির্দেশিকার শেষে দেয়া আছে।  শিক্ষক এই রিপোর্ট কার্ডে কোনো নম্বরমান বা গ্রেড উল্লেখ করবেন না। মুল্যায়ন নির্দেশিকায় বর্ণিত অবস্থান নির্দেশক বা সহায়তা প্রয়োজন লিখবেন এবং শিক্ষার্থী/অভিভাবককে প্রদান করবেন।

১৫. বাংলা, ইংরেজী ও গণিত বিষয়ের ধারাবাহিক মুল্যায়নের একটি করে নমুনা ছক  এবং শিখন  অগ্রগতি প্রতিবেদন তৈরির প্রতি উদার সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়েছে। উক্ত নমুনার আলোকে শিক্ষক‌ বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণি অগ্রগতির প্রতিবেদন প্রস্তুত করবেন ।

প্রশিক্ষণ পূর্ব মূল্যায়ন

প্রশ্ন ও উত্তর একসাথে প্রস্তুতি নিন এখনি !!!

শিক্ষাক্রম বিস্তরণ বিষয়ক প্রশিক্ষক প্রশিক্ষণ কর্মশালা ২০২৩

মূল্যায়ন প্রশ্নত্তোরিকা

প্রশিক্ষণ পূর্ব মূল্যায়ন                                                    সময়: ১০ মিনিট

১. প্রাথমিক শিক্ষাক্রমের দার্শনিক ভিত্তি কী কী?

অপরিবর্তনশীলতা বা অবিনশ্বরবাদ, অপরিহার্যতাবাদ, প্রগতিশীলতাবাদ এবং পুনর্গঠনবাদ।

২. প্রাথমিক শিক্ষাক্রমের যোগ্যতার উপাদানসমুহ কী কী?

জ্ঞান,দক্ষতা , মুল্যবোধ ও দৃষ্টিভঙ্গি

৩. প্রাথমিক শিক্ষাক্রম (২০২১) বিষয়ভিত্তিক যোগ্যতাকে কীভাবে বিস্তৃত করা হয়েছে?

নির্ধারিত বিষয়ভিত্তিক যোগ্যতা থেকে আবশ্যকীয় শিখনক্রম মোতাবেক শিক্ষার্থীদের বয়স ,সামর্থ্য, মানসিক পরিপক্কতা ও ধারণ ক্ষমতা বিবেচনা করে শ্রেণিভিত্তিক  অজন উপযোগী যোগ্যতা শনাক্ত করে ।

৪. প্রাথমিক শিক্ষাক্রম (২০১১) নতুন কী কী বিষয় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে?

– শিল্পকলা, শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য এবং সুরক্ষা।

৫. জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষাক্রম ২০১১ এবং ২০২১ এর ৩টি মৌলিক পার্থক্য উল্লেখ করুন।

জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষাক্রম ২০১১জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষাক্রম ২০২১
যোগ্যতাভিত্তিক (প্রথম -পঞ্চম শ্রেণি) ২৯টি মূল যোগ্যতার উপর ভিত্তি করে শিক্ষাক্রম বিস্তৃত করা হয়েছে।যোগ্যতাভিত্তিক (প্রাক-প্রাথমিক থেকে দ্বাদশ শ্রেণি) ১০টি মুল যোগ্যতা থেকে শিক্ষাক্রম বিস্তৃত করা হয়েছে।
শিক্ষাক্রম অন্তর্ভুক্তিমূলক।শিক্ষাক্রমে যোগ্যতা, শিখনফল এবং পরিকল্পিত কাজসমূহ  অন্তর্ভুক্তিমূলক করে পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে।
শিক্ষাক্রমে মূল্যায়ন পদ্ধতি ও কৌশল ছিল না।শিক্ষাক্রমে মূল্যায়ন পদ্ধতি ও কৌশল এবং ধারাবাহিক মূল্যায়নের নির্দেশনা সংযোজন করা হয়েছে।

৬. প্রাথমিক শিক্ষাক্রম (২০২১) এর শিখন শেখানো কার্যক্রমের মূল বৈশিষ্ট্য কী?

 – ধারাবাহিক মুল্যায়ন ( ডায়েরী-১, ডায়েরী-২) ব্যবহার এবং তিনটি প্রান্তিক মুল্যায়ন ( সামষ্টিক) ।

৭. শিক্ষাক্রমে ক্রস কাটিং বিষয়গুলো কী কী?

“Cross-cutting subjects” শিক্ষাক্রমে ক্রস কাটিং বিষয়গুলি একটি শিক্ষাক্রমের বিভিন্ন শ্রেণীসমূহে নির্দিষ্ট বিষয়ের স্থানীয় বা একক বিষয় হিসেবে শেখানো নয়, বরং এগুলি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষাক্রমের বিভিন্ন অংশে সমন্বয় করতে হয়। এই বিষয়গুলি অন্যত্রও শিখানো হতে পারে, এমনকি একক বিষয়ে শিখানো বৈকল্পিক হতে পারে না। ক্রস কাটিং বিষয়গুলি বিভিন্ন শিক্ষা সিস্টেম থেকে ভিন্ন হতে পারে, তবে কিছু সাধারণ উদাহরণ নিম্নলিখিত: যেমন-

পরিবেশ শিক্ষা, ICT,ক্রিটিক্যাল থিংকিং এবং প্রবলেম সলভিং, বৈশ্বিক নাগরিক শিক্ষা, স্বাস্থ্য ইত্যাদি ।  ক্রস কাটিং বিষয়গুলির অন্তর্ভুক্তি শিক্ষা নীতি, পাঠ্যক্রম মান, এবং প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্যের উপর নির্ভর করে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষাক্রমে ব্যাপকভাবে পরিচয় করা হয়। এই বিষয়গুলি শিক্ষার্থীদের সত্যিকার প্রাপ্তি দেওয়ার জন্য নিবোধিত হয় যা বিষয়-বিশেষ জ্ঞানের বাইরে বিশ্বের সমস্ত ব্যক্তিগত এবং পেশাদার দক্ষতা ও সচেতনা উন্নত করে।

৮. ধারাবাহিক মূল্যায়নের মূল উদ্দেশ্য কী?

–  ধারাবাহিক মূল্যায়নের প্রধান উদ্দেশ্য হলো শিক্ষার্থীকে তার শিখনে সহায়তা করা।

৯. বাংলা ইংরেজি বিষয়ের মূল বৈশিষ্ট্য কী কী?

– শোনা ,বলা, পড়া ও লেখার পাশাপাশি বিকল্প গ্রহণ এবং প্রকাশকে গুরুত্বের সঙ্গে গ্রহণ করা হয়েছে ।

বাংলা বিষয়ের মূল বৈশিষ্ট্য:

মাতৃভাষা,ভাষার স্বাভাবিক বৃদ্ধি,গ্রামার এবং রচনা,সাহিত্য ও সংস্কৃতি ।

ইংরেজি বিষয়ের মূল বৈশিষ্ট্য:

ব্যাপক ব্যবহার,কোম্যুনিকেশন স্কিল,সমৃদ্ধ সাহিত্য পাঠ, গ্রামার এবং ভোকাবুলারি বৃদ্ধি ।

১০. ধর্ম নৈতিক বিষয়সমূহের মধ্যে মিলের জায়গাটি কোথায়?

নিজ ধর্ম সম্পর্কে জানা এবং ধর্মীয় জ্ঞান, বিশ্বাস, মূল্যবোধ, বিধিবিধান ও অনুশাসন উপলব্ধি করে তা নিজ জীবনে অনুশীলন করা এবং অন্যের ধর্ম ও বিশ্বাসের প্রতি সহনশীলতা প্রদর্শন করে শান্তিপূর্ণ সহবস্থান নিশ্চিত করা ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা বিষয়ের মূল উপজীব্য।

কনটেন্টটি ভালো লাগলে অপরকে জানার সুযোগ করে দিন । পেজটি শেয়ার করুন ।

ডাউনলোড করুন ডায়েরী -১ এবং ডায়েরী-২

আরো তথ্য জানতে ভিজিট করুন: https://instantresultbd.com